টেকনোলজি এবং অনলাইন

ক্রিপ্টোকারন্সি কি? ক্রিপটো কারেন্সি নিয়ে সব প্রশ্নের উত্তর

ডিজিটাল যুগে সকল কার্যক্রম এখন টেকনোলজি নির্ভর হয়ে দাঁড়িয়েছে, টেকনোলজি ছাড়া আমরা আমাদের জীবন এখন কল্পনা করতে পরিনা। ঠিক এরকমই একটি ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম কে বলা হয় ক্রিপ্টো কারেন্সি। এখানে আমরা ক্রিপ্টো কারেন্সি কি ? এবং বর্তমান এর সেরা ৫ টি ক্রিপ্টো কারেন্সি নিয়ে বিস্তারিত জানব।

 

ক্রিপ্টো কারেন্সি কি?

কারেন্সি মনে হলো মুদ্রা। আমরা সাধারণত মুদ্রায় মাধ্যমে সব জায়গায় পন্য ক্রয় করে থাকি, কিন্তু ক্রিপ্টো কারেন্সি হচ্ছে ডিজিটাল মুদ্রা, যা আপনি দেখতে পান না। এটি কোন ব্যাংক বা ভেরিফাইড অর্থ স্থানান্তর এর উপর ভরসা করে না, এবং যা অনলাইন ডাটাবেসের মাধ্যমের পে করা হয়।

এই ক্রিপ্টো করেছি অর্থাৎ ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার করে বিভিন্ন সার্ভিস নিতে পারেন এবং কেনাকাটা ও করতে পারেন। এর উপরে কোন গভর্নমেন্ট অথবা কোন এজেন্সি বা ব্যাংক এর হাত থাকে না। এটি শুধুমাত্র ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এ পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে লেনদেন করা হয় এবং যা মুদ্রার পরিবর্তে সব কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে।

ক্রিপটো কারেন্সির ছবি
ক্রিপ্টোকারেন্সির ছবি

ক্রিপ্টো কারেন্সি একটি প্রসেস এর মাধ্যমে হয়, যেটাকে বলা হয় মাইনিং, যেটি একটি কম্পিউটার পাওয়ার এর সাথে সম্পৃক্ত থাকে সব ধরনের জটিল ম্যাথমেটিকাল সমস্যা সমাধান করে ডিজিটাল মুদ্রা উৎপাদন করে থাকে। ক্রিপ্টো কারেন্সি অবৈধ কাজেও ব্যাবহৃত হতে পারে এমন টা ধারনা করা হয়ে থাকে। এখন আমরা বিশ্বের সেরা ৫ টি ক্রিপ্টো কারেন্সি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো।

 

বর্তমান ২০২২ সাল এর সেরা ৫ টি ক্রিপ্টো কারেন্সি

 

৫. Binance Coin (বাইনান্স কয়েন/BNB)

এটি এক ধরনের ক্রিপ্টো কারেন্সি যা ব্যবসা এবং বিভিন্ন টাকা পরিশোধ করতে ব্যাবহৃত হয় এবং এটি হয় বাইনান্স এর মাধ্যমে। বাইনান্স একটি ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ সিস্টেম। বাইনান্স কয়েন হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ক্রিপ্টো কারেন্সির মধ্যে একটি। এটি ২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এটি লেনদেন, পেমেন্ট এবং ট্রাভেল বুকিং এ ব্যাবহৃত হয়। বাইনান্স কয়েন এর বর্তমান মার্কেট ক্যাপিটাল $৪৯ বিলিয়ন।

 

৪. U.S Dollar Coin (ইউ. এস. ডলার কয়েন/USDC)

এটি ৪র্থ বৃহৎ ক্রিপ্টো কারেন্সি, এবং এটি পরিচালনা করা হয় এথেরেইম (ethereum) নামক একটি সিস্টেম দ্বারা। এটি গোটা পৃথিবীতে বিশ্বব্যাপী লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাবহৃত হয়ে থাকে।  এই ক্রিপ্টো কারেন্সির বর্তমান মার্কেট ক্যাপিটাল $৫৪ বিলিয়ন।

 

 

৩. Tether (টিথার/USDT)

এই ক্রিপ্টো কারেন্সি আর বাকি গুলার মত একই ধরনের নয়। এটি একটি ভিন্ন। এটি একটি স্ট্যাবল কয়েন সিস্টেম। যার মানে এটি ডিজিটাল মুদ্রা রিসার্ভ করে রাখে ইউএস ডলার অথবা স্বর্ণমুদ্রা এর মত। যার জন্য এটির ভ্যালু অন্যান্য ক্রিপ্টো কারেন্সি থেকে ধারাবাহিক, যে কারণে ইনভেস্টর রা এই ক্রিপ্টো কারেন্সি বেশি পছন্দ করে থাকে বাকি গুলো থেকে। টিথার এর বর্তমান মার্কেট ক্যাপিটাল $৭২ বিলিয়ন।

 

২. Ethereum (ইথেরিয়াম/ETH)

এটি হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহৎ ক্রিপ্টো কারেন্সি। এটি একসাথে ক্রিপ্টো কারেন্সি এবং একটি ব্লকচেইন প্ল্যাটফর্ম। ইথেরিয়াম এর কিছু সম্ভাব্য অ্যাপ্লিকেশন এর জন্য এটি প্রোগ্রাম ডেভেলপার দের জন্য অত্যন্ত পছন্দের প্ল্যাটফর্ম। এটি প্রতিষ্ঠাতা হলো ভিতালিক বুতেরিন। এই ক্রিপ্টো কারেন্সির বর্তমান মার্কেট ক্যাপিটাল $২১৯ বিলিয়ন।

 

১. Bitcoin (বিটকয়েন/BTC)

বিটকয়েন ২০০৯ সালে তৈরি হয় সাতোশি নাকামত এর মাধ্যমে।  এটি সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় বিটকয়েন, যে কারণে এটি কে অনেক সময় অরিজিনাল ক্রিপ্টো কারেন্সি বলা হয়ে থাকে। এটাকে মূলত শপিং এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় এবং এটিতে সরকার এর কোন হাত নেই। বিটকয়েনের ভ্যালু শেয়ার মার্কেট এর মত বাড়তে ও কমতে থাকে। বর্তমান এ মাত্র একটু বিটকয়েনের মূল্য ২৫ লক্ষ টাকার মত। বিটকয়েনের অন্যান্য ক্রিপ্টো কারেন্সির একেবারেই ধরা ছোঁয়ার বাইরে। সেজন্য এটি কে প্রধান ক্রিপ্টো কারেন্সি বলে এবং এর বর্তমান মার্কেট ক্যাপিটাল হলো $৫৬৫ বিলিয়ন।

 

উপরের আলোচনায় আমরা ক্রিপ্টো কারেন্সি সম্পর্কে বিস্তারিত একটা আইডিয়া নিতে পেরেছি।এটি অন্যান্য ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের তুলনায় অত্যধিক সুরক্ষিত এবং এটি তে অ্যাকাউন্ট গুলো সুরক্ষিত থাকে কিন্তু এর কিছু অসুবিধা আছে, যেহেতু এটিতে গভর্নমেন্টের কোন হাত থাকে না, সেহেতু এখানে ইনভেস্ট করা অবশ্যই একটু বেশি ঝুঁকিপূর্ন হয়ে যায় এবং এখানে কিছুটা হ্যাকিং এর সম্ভাবনা থাকে, এইসব কারণে অনেক দেশে ক্রিপ্টো কারেন্সি নিষিদ্ধ। তাই আমরা যত টা সম্ভব আমাদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এ ভাল ভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো।