জীবনের গল্প

ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এর জীবনী |Bangla biography of Mark Zuckerberg.

আমাদের মধ্যে একটা ভ্রান্ত ধারনা আছে যে, পৃথিবীতে কোন কিছু আবিষ্কার করতে হলে অনেক বয়স পার করার পর সেটি তে সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়। কিন্তু আজকে যার গল্প বলবো সেটি একদম ভিন্ন। মার্ক জাকারবার্গ, যিনি বিশ্বের সবচেয়ে বহুল প্রচলিত সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা। হ্যা তিনি খুব কম বয়সেই একজন সফল প্রতিষ্ঠাতা হয়ে যান এবং মাত্র ২৩ বছর বয়সে বিলিয়নিয়ার দের কাতারে ঢুকে পড়েন। বর্তমানে তিনি পৃথিবীর সারা দশ ধনী দের একজন। ফেসবুক শব্দটির সাথে খুব ভালভাবে আমাদের পরিচিতি থাকলেও হয়তো মার্ক জাকারবার্গ এর সাথে আমাদের খুব একটা পরিচিতি নেই। তাই আজকে আমরা মার্ক জাকারবার্গ এর জীবন কাহিনী সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো।

 

বাল্যকাল

তার সম্পূর্ণ নাম মার্ক ইলিয়ট জাকারবার্গ। তিনি ১৯৮৪ সালের ১৪ই মে তে নিউ ইয়র্ক সিটি তে জন্মগ্রহন করেন। তার পরিবারে তার বাবা মা এবং আরও তিনজন বন ছিল। তিনি ছোট থেকেই প্রোগ্রামিং এবং কম্পিউটার নিয়ে অনেক আগ্রহী ছিল। অতঃপর তার বাবার সাহায্য সহকারে একটি মেসেজিং প্রোগ্রাম তৈরি করে ফেলেন মাত্র ১২ বছর বয়সে এবং তিনি এটার নাম দেন zucknet। যেটির মাধ্যমে একটি কম্পিউটার এর সাথে আরেকটি কম্পিউটার এর সংযোগ দিয়ে মেসেজিং করা যেত। এরপরও তিনি থেমে থাকেনি, তিনি নানা ধরনের গেমস, মিউজিক এর সফটওয়্যার তৈরি করেন, যার কারণে নানা ধরনের বড় বড় কোম্পানি থেকে এগুলো কিনে নেয়ার অফার আসতে থাকে, কিন্তু তিনি এগুলো অফার প্রত্যাখ্যান করে দেন।

 

শিক্ষাজীবন

প্রোগ্রামিং এবং কম্পিউটার এর যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে তুমুল আগ্রহ দেখে তার জন্য একজন হোম টিউটর ডেভিড নিউম্যান কে নিযুক্ত করা হয়, এর পাশাপাশি মার্ক তার স্কুল ফিলিপ এক্সেটের অ্যাকাডেমি এর ক্লাস ক্যাপ্টেন ছিলেন, কম্পিউটার এর পাশাপাশি তিনি সাইন্স, ইতিহাস, ক্লাসিক ইত্যাদি বিষয়েও যথেষ্ট ভাল ছিলেন। কিন্তু তার সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ ছিল কম্পিউটার এর প্রতি , এজন্য তিনি স্কুল জীবনে নানা সফটও্যায়ার ডেভেলপ করতেই থাকেন। এরপর তিনি ২০০২ সালে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হন। এরপর তিনি আস্তে আস্তে তার সকল ধ্যান ধারনা, চিন্তা চেতনা সব কিছু ফেসবুক তৈরি তে দিতে থাকেন।

 

ফেসবুক কিভাবে শুরু করলেন

তিনি তার আইডিয়া অনুযায়ী ফেসম্যাশ নামে একটি ওয়েবসাইট বানান, যেই ওয়েব সাইট এ তিনি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির সব ছাত্র দের ফটো ভার্সিটির ডাটাবেস থেকে চুরি করে সেগুলো ব্যবহার করতেন। এই ওয়েবসাইট আস্তে আস্তে ইউনিভার্সিটি তে জনপ্রিয় হয়ে গেলেও ভার্সিটি কর্তৃপক্ষ এটিকে ভাল চোখে দেখে না। কারণ ডাটাবেস হ্যাক করার মাধ্যমে মার্ক সব চুরি করেছিলেন। পরে এই ওয়েবসাইট টি বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর তার এক বন্ধু দিব্যা তাকে এই আইডিয়া কাজে লাগিয়ে অন্য একটি ওয়েবসাইট খুলতে বলেন। তখন মার্ক এমন একটি ওয়েবসাইট খুলতে সক্ষম হলেন যেখানে সবার পার্সোনাল ফটো, ঠিকানা থাকবে এবং যে যা খুশি পোস্ট ও করতে পারবে। এরপর তিনি তার এই ওয়েবসাইট এর প্ল্যানিং নিয়ে তার ২/৩ জন বন্ধু কে জানান এবং তারাও তার সাথে কাজ করতে রাজি হয়। এরপর তিনি ২০০৪ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে Thefacebook.com নামে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেন। এটি প্রথমত শুধু হার্ভার্ড এর ছাত্র দের জন্য খুলা হয়েছিল এবং কিছু সময়ের মধ্যেই ৪০০০ ইউজার তাদের আইডি রেজিস্টার করে ফেলেন এই ওয়েবসাইটে এবং মার্ক খুব ভালভাবেই এর জনপ্রিয়তা বুঝতে পারেন এবং তিনি বুঝে ফেলেন যে এটা গোটা পৃথিবীর মানুষের জনই পছন্দের ওয়েবসাইট হয়ে যাবে এবং তিনি এটির ডেভেলপ শুরু করে দেন। এরপর তিনি এই ফেসবুকের উপর সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে পড়াশুনা পর্যন্ত ছেড়ে দেন এবং কিছু দিনের মধ্যেই মাত্র ২৩ বছর বয়সে তিনি বিলিয়নিয়র হয়ে যান। বছরের পর বছর দুনিয়াতে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে দিন এর পর দিন ফেসবুক এর ইউজার বাড়তেই থাকল। এবং বর্তমানে এটি পৃথিবীর টপ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যার ইউজার সবচেয়ে বেশি। মার্ক জাকারবার্গের উক্তি 

মার্ক জাকারবার্গের স্ত্রী এবং পরিবার 

মার্ক জাকারবার্গ  এর স্ত্রীর নাম প্রিসিলিয়া চেন। তিনি একজন চাইনিজ বংশদ্ভুত আমেরিকান। জাকারবার্গ ২০১২ সালে প্রিসিলিয়াকে বিয়ে করেন । মার্ক এবং প্রিসিলিয়া দম্পতির সন্তানের নাম মেক্স । 

 

এভাবেই মার্ক জাকারবার্গ যুবক অবস্থায় ধনি ব্যক্তি হয়ে সফলতা অর্জন করে দেখান এবং তিনি ২০১৫ সালে forbes ম্যাগাজিন এ পাবলিশ করা আর্টিকেল এ বিশ্বের ৪০০ ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন। তিনি সকল তরুণ উদ্যোক্তা দের জন্য একজন আইডল হয়ে থাকবেন।

 

 

 

 

 

 

2 thoughts on “ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এর জীবনী |Bangla biography of Mark Zuckerberg.

Comments are closed.