তথ্য

ভোটার আইডি(NID) স্মার্টকার্ড কিভাবে করতে হয় এবং সংশোধন পদ্ধতি

ভোটার আইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্র হলো আমাদের সকল জাতীয় কার্যক্রমের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট। যা একজন নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রতিটা কাজে দরকার হয়৷ জাতীয় পরিচয় পত্র দ্বারা রাষ্ট্র একজন মানুষকে ঐ দেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে এবং তাকে সে দেশের একজন নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দান করে। এক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। সেই সময়ের আগে কেউ ভোটার আইডি কার্ড গ্রহন করার আবেদন করতে পারবে না। বাংলাদেশে সরকার কতৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৮ বছরের আগে কেউ ভোটার হতে পারবে না। অর্থাৎ ১৮ বছরের পর একজন নাগরিক ভোট প্রদানের ক্ষমতা লাভ করে এবং পাশাপাশি রাষ্ট্রের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে।

জাতীয় পরিচয়প্ত্র
স্মার্টকার্ড অনলাইন

 

 

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কীভাবে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করতে হয় এবং কোনো ভুলত্রুটি হলে তা কীভাবে সংশোধন করতে হয় তার পদ্ধতি সম্পর্কে জানবো।

 

 

প্রথমেই জেনে নিই ভোটার হতে কি কি ডকুমেন্টস এর প্রয়োজনঃ

 

১. জন্ম নিবন্ধন / সনদ এর ফটোকপি।

 

২. অভিভাবকের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।

 

৩. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন সনদ/ বোর্ড পরীক্ষায় উর্ত্তীন হওয়ার সার্টিফিকেট

 

৪. প্রত্যয়ন পত্র/ চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট ( ওয়ার্ড কাউন্সিল অফিস কিংবা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অফিস থেকে সংগ্রহ করে নিতে হবে)

 

৫. জমি সংক্রান্ত দলিল ( এক্ষেত্রে জমির খতিয়ান নং এর দলিল সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করতে হয় তবে এটি আবশ্যক নয়)

 

৬. ইলেকট্রিসিটি বিল ( বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি, ইহাও একটি এডিশনাল ডকুমেন্ট)

 

৭. রক্তের গ্রুপ সার্টিফিকেট

 

 

                                                                                                                                                 

অফলাইনে ভোটার হওয়ার আবেদনঃ

 

বাংলাদেশ সরকার প্রতি ২ থেকে ৩ বছর অন্তর অন্তর ভোটার তথ্য হালনাগাদের ক্যাম্পেইন শুরু করে। জেলা / উপজেলা / সিটি কর্পোরেশন / ওয়ার্ড এর উপর ভিত্তি করে সরকার কতৃক বিভিন্ন সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া হয় এবং বিভিন্ন কেন্দ্র নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। আপনি চাইলে তখন ভোটার তথ্য ফরম সংগ্রহ করে উপরোক্ত সকল ডকুমেন্টসের সহিত নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্হানে সকল তথ্য প্রদান করতে পারেন৷ পরবর্তী সকল কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের আওতাধীনে সম্পন্ন হবে।

তাছাড়া ভোটার হওয়ার উদ্দেশ্যে উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসের সাহায্য নিতে পারেন৷ সেখানে গিয়ে আবেদনের সাথে সকল ডকুমেন্টস জমা দিয়ে আসতে পারেন।

বিঃদ্রঃ তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন যাতে কোনো তথ্য ভুল না-হয়। এতে পরবর্তীকালে বিভিন্ন ভোগান্তির স্বীকার হতে পারেন।

 

 

অনলাইনে ভোটার হওয়ার আবেদনঃ

 

বাংলাদেশ এখন একটি ডিজিটাল দেশ। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের সকল কার্যক্রম তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠেছে। আজকাল ঘরে বসেই অনলাইনে যেকোনো কাজ সেরে ফেলা যায়। নতুন ভোটার হওয়ার আবেদনটিও আপনি এখন ঘরে বসে করতে পারেন৷

 চলুন এর পুরো প্রসেসটি সম্পর্কে জানি-

 

১. ইন্টারনেট ব্রাউজারের মাধ্যমে NID Online Registration ওয়েবপেজটি ওপেন করুন।

 

২. উক্ত ওয়েবপেজ থেকে Bangladesh NID Application System এ আপনার একাউন্ট তৈরি করুন।

 

৩. নাম, জন্ম তারিখ, সচল ফোন নাম্বার ও ক্যাপচা কোড দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করুন। এক্ষেত্রে ভেরিফিকেশন কোড প্রদান করা হবে আপনার সচল ফোন নাম্বারে।

 

৪. ভবিষ্যতে লগিনের জন্য নাম্বার ও পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করুন।

 

৫. অ্যাকাউন্টে লগিনের পর ব্যাক্তিগত সকল তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করুন।

 

৬. প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস এর স্ক্যানড কপি আপলোড করুন এবং আবেদন সাবমিট করুন।

 

৭. আপনার আবেদনটি সম্পন্ন হলে ভেরিফিকেশনের উদ্দেশ্য নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে যোগাযোগ করা হবে।

 

৮. আবেদনটি যাচাই হলে আপনার ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে ডাকা হবে৷

 

৯. আবেদনটি অনুমোদিত হলে ১৫-২০ কর্ম দিবসের মধ্যে আপনার ফোন নাম্বারে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোডের মেসেজ আসবে।

 

১০. পূর্বে সংগৃহীত ফোন নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্টে লগিন করে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করে নিন।

 

 

 

 

 

ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করার পদ্ধতিঃ

 

 

ভোটার আইডি কার্ড একজন নাগরিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় একটি ডকুমেন্টস। আর এই গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টসে যদি কোনো রকম ভুল তথ্য থেকে থাকে তাহলে তা বিরাট ভোগান্তির কারণ হতে পারে। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই, নির্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়া অনুসরনের মাধ্যমে ভুল তথ্য সংশোধন করে নেওয়া যায়। 

চলুন জেনে নিই ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য ভুল থাকলে তা সংশোধন করার পদ্ধতি সম্পর্কে

 

১. দেশের নাগরিকদের জাতীয় পরিচয় পত্র সম্পর্কে সেবা প্রদান করতে নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট তৈরি করেছে৷ nidw.gov.bd এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।

 

২. ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে রেজিস্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য প্রদান করে রেজিস্টার করে নিন। মনে রাখবেন নতুন নিবন্ধনের জন্য করা রেজিষ্ট্রেশন আর এই রেজিস্ট্রেশন এক নয়। সম্পুর্ন আলাদা প্রক্রিয়া এটি।

 

৩. জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ,  ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, যাচাইকরণ কোড এবং পাসওয়ার্ড ইত্যাদি তথ্য প্রদান করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন এবং লগিন করুন।

 

৪. লগিনের পর আপনার প্রোফাইলে প্রবেশ করে এডিট মোডে যান।

 

৫. যেসব তথ্য সংশোধন করা প্রয়োজন তা নির্ধারণ করে নিন এবং পরিবর্তিত সকল তথ্য প্রদান করুন।

 

৬. ট্রানজেকশনের বিবরণ ও মাধ্যম নির্বাচন করে সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট ফি প্রদান করুন।

 

৭. এই ধাপে মূলত সংশোধনের তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রমাণ হিসেবে নির্দিষ্ট কাগজ পত্রের স্ক্যানড কপি আপলোড করুন।

 

৮. সকল তথ্য পুনরায় যাচাই করে নিশ্চিত বাটনে ক্লিক করে আবেদন সম্পন্ন করুন।

 

৯. পরবর্তীকালে মেসেজ আসলে অ্যাকাউন্টে লগিন করে সংশোধিত আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিন।

 

 

তাছাড়া আপনি চাইলে অফলাইনেও আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করতে পারেন। এক্ষেত্রে ওয়েবসাইট হতে নির্দিষ্ট ফরম ডাউনলোড করে নিকটস্থ নির্বাচন কমিশন অফিসে সকল তথ্য ও প্রমানাদি নিয়ে উপস্থিত হন৷ নির্দিষ্ট ব্যাংক বা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে নির্ধারিত ফি প্রদান করে সম্পুর্ন প্রসেস সম্পন্ন করুন।

 

 

 

 

আর্টিকেলটি ভাল লাগলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে সাথে ফেসবুকে শেয়ার করুন এবং এই ধরনের আরো বিভিন্ন পোস্ট পেতে আমাদের সাইটটি ঘুরে দেখুন।