জীবনের গল্প

গুগল এর প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেইজ এর জীবনী |Google owner Larry Page Biography

ল্যারি পেইজ, নামটা হয়তো খুব একটা পরিচিত না কিন্তু উনার ইনভেন্ট করা Google নাম তার সাথে আমরা খুবই পরিচিত। হ্যা, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় অংশ হচ্ছে গুগল সার্চ ইঞ্জিন। আমাদের কোন কিছু জানার জন্য বা ইম্পর্ট্যান্ট কোন তথ্য সংগ্রহ বা অনলাইন জগতে যেকোন কিছু খুজে বের করার জন্য আমরা গুগল সার্চ ইঞ্জিন ব্যাবহার করে থাকি। আর এই গুগলের আবিষ্কারক হচ্ছে ল্যারি পেইজ। আজকে আমরা তার জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

 

ল্যারি পেইজ –

ল্যারি পেইজ একজন ইন্টারনেট উদ্যোক্তা এবং কম্পিউটার বিজ্ঞানী যিনি তার স্কুল বন্ধু সার্জি ব্রিন এর সাথে মিলে ১৯৯৮ সালে গুগল সার্চ ইঞ্জিন চালু করেন। তিনি ২৩ এ মার্চ, ১৯৭৩ সালে মিশিগান এ জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতামাতা উভয়ই কম্পিউটারে দক্ষ ছিলেন। এবং তার স্ত্রীর নাম ছিল লুসিন্ডা সাউথওয়র্থ। ল্যারি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনয়ারিং পাশ করেন এবং এরপরে তিনি তার বন্ধু সার্জী কে সাথে নিয়ে গুগল সার্চ ইঞ্জিন বানানোর কাজে লেগে পড়েন এবং ১৯৯৮ সালে সফল ভাবে গুগল সার্চ ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন।

 

 

জীবনের শুরু এবং শিক্ষা-

তিনি ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটার নিয়ে অনেক গবেষণা করে থাকেন, তার বাবা মা দুজনে কম্পিউটার এক্সপার্ট এবং তার বড় ভাই একজন সফল অনলাইন উদ্যোক্তা হওয়ায় তিনি পরিবার থেকে অনেক সাহায্য পান এবং বাড়িতে কম্পিউটার সম্পর্কিত যাবতীয় বই এবং সামগ্রী থাকার কারণে তিনি এগুলো নিয়ে গবেষনা করার অনেক সুযোগ পান। তিনি প্রথমে মন্তেসরি স্কুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন, এরপর তার সৃজনশীলতার অনেক বিকাশ ঘটার পরে তিনি ইস্ট ল্যানসিং হয় স্কুলে পড়াশুনা করেন এরপর তিনি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হবার পরে সেখান থেকেই আস্তে আস্তে গুগলের যাত্রা শুরু হয়।

 

গুগলের আবিস্কার-

স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে একটি রিসার্চ প্রজেক্টের কাজে ল্যারি এবং ব্রিন একটি সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করেন যেখানে জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে কিছু পেইজ এর লিস্ট করেন এবং সেখানে সার্চ দিলে সবচেয়ে জনপ্রিয় পেইজ সবার আগে আসত। তারপর তারা এই সার্চ ইঞ্জিন এর নাম দেন “Google”. এবং এখানে তারা দুইটা o দিয়ে দুইটা শুন্য কে নির্দেশ করেছেন , অর্থাৎ ১ এর সাথে ১০০. এটার দ্বারা এটি বুঝিয়েছেন যে তাদের উদ্দেশ্য অনেক পরিমাণে তথ্য উপস্থিত থাকবে এই ওয়েব এ। এবং এরপর তারা পরিবার,বন্ধু এবং অন্যান্য বিনিয়োগকারী দের থেকে ১ মিলিয়ন ডলার তুলার পরে এই অর্থ এই সার্চ ইঞ্জিন এর উপরে বিনিয়োগ করেন এবং ১৯৯৮ এ এই কোম্পানি এর যাত্রা শুরু হয়।

 

 

সাফল্য-

 একটি অবাক করার মতো ঘটনা হলো, নব্বই এর দশকে সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন Yahoo ল্যারি এবং ব্রিন এর কাছ থেকে গুগল ক্রয় করার অফার ফিরিয়ে দেয়। এরপর ২০০৪ সালে যখন গুগল এর নাম শেয়ার মার্কেটে আসে ঠিক তখনই ল্যারি এবং ব্রিন অনেক সম্পদের মালিক হয়ে যান এবং তারা রাতারাতি বিলিয়নারি হয়ে যান। এরপরে বিভিন্ন সময়ে নানা ব্যস্ততার কারণে ল্যারি মাঝখানে কিছু সময় ঠিক মত সি ই ও এর দায়িত্ব পালন করতে পারেননি, কিন্তু তিনি সবসময় গুগলের শেয়ার এ ছিলেন এবং পরে ২০০৫ সলে তিনি গুগল কে ভালোমত গোটা বিশ্বে সবার হাতের মুঠোয় পৌঁছিয়ে দেওয়ার জন্য “অ্যান্ড্রয়েড” কোম্পানি কিনে ফেলেন এবং এরপরে গুগল আস্তে আস্তে সফলতার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাতে থাকে। এবং ২০১০ সালে এসে গুগলের কর্মী হয় ২৪০০০ এর কাছাকাছি এবং এটি একটি ১৮০ বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হয়। ২০১৩ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী গুগল হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন এবং এটিতে দিন এ গড়ে ৫.৯ বিলিয়ন বার সার্চ করা হয়ে থাকে।

 

এই ছিল একজন সফল উদ্যোক্তা ল্যারি পেইজ এর জীবনী, তিনি তার মেধা কে কাজে লাগিয়ে সফলতার চরম শিখরে পৌঁছাতে পেরেছেন এবং বর্তমানে তার সম্পদ ৫৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে এবং ২০১৯ সালের রিপোর্টে তিনি বিশ্বের ধনীদের তালিকায় দশম অবস্থানে আছেন।